কিংবদন্তী আইয়ুব বাচ্চুর ইচ্ছা অনুসারে মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে তাকে। শনিবার ভক্তদের শ্রদ্ধা নিবেদনের শেষে বাদ আছর নামাজে জানাজা পর চট্টগ্রাম নগরীর চৈতন্য গলি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
শনিবার বাদ আছর জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে আইয়ুব বাচ্চুর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় হাজারো মানুষ অংশ নেয়। জানাজা নামাজের ইমামতি করেন জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের খতিব অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আল কাদেরি।
জানাজার পূর্বে আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। প্রিয় শিল্পীকে শেষবারের মতো দেখতে সকাল থেকে সেখানে ভিড় করেন স্বজন, হাজারো ভক্ত ও প্রিয়জনেরা।
দুপুর আড়াইটার পর আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর জামিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে। সেখানে খোলা হয় শোক বই। সেখানে শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ।
এর আগে সকালে পূর্ব মাদারবাড়ীর বালুর মাঠে রাখা হয় আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ। সেখানে স্বজন, হাজারো ভক্ত, শ্রোতা ও প্রিয়জনেরা তাকে শেষ বারের মতো দেখেন।
শনিবার সকাল ১১টার দিকে ইউএস বাংলার ফ্লাইটে তার মরদেহটি চট্টগ্রামে নেয়া হয়। মরদেহের সঙ্গে তার স্ত্রী, দুই সন্তান আহনাফ তাজওয়ার ও মেয়ে ফাইরুজ সাফরাসহ ২১ জন ছিলেন।
এছাড়া শুক্রবার সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয় কিংবদন্তি ব্যান্ড শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ। জাতীয় ঈদগাহে জানাজা ছাড়াও আরও দুটি জানাজা হয় ঢাকায়।
বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ৮টায় হৃদরোগের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। সকাল সোয়া ৯টায় তাকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ৯টা ৫৫ মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীত জগতে আইয়ুব বাচ্চুর অবদান অসামান্য। গানের পাশাপাশি গিটারেও ভক্তদের মাত করেছেন তিনি। আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘সেই তুমি কেন অচেনা হলে’, ‘একদিন ঘুম ভাঙ্গা শহরে’, ‘মেয়ে ও মেয়ে’, ‘কবিতা সুখ ওড়াও’, ‘এক আকাশ তারা’ গানগুলো ঘুরেছে মানুষের মুখে মুখে।
১৯৭৮ সালে সঙ্গীতজীবন শুরু করেন আইয়ুব বাচ্চু। আইয়ুব বাচ্চু একাধারে গায়ক, লিড গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার, প্লেব্যাক শিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন।
সোলসের হয়ে ব্যান্ড সঙ্গীতে পা রাখার পর ১৯৯০ সালে নিজের ব্যান্ড দল প্রতিষ্ঠা করেন আইয়ুব বাচ্চু। ব্যান্ডের নাম রাখেন ‘লিটল রিভার ব্যান্ড’। পরবর্তীতে এর নাম বদলে রাখা হয় ‘লাভ রান্স ব্লাইন্ড’। ওই বছরই এলআরবি ডাবল অ্যালবাম দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু করে। ১৯৯৫ সালে বাচ্চু তার তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘কষ্ট’ বের করেন। বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা একক অ্যালবামগুলোর মধ্যে একটি এটি।